Home / Exclusive / পাহাড়ে বাতাসে ফলের ঘ্রাণ

পাহাড়ে বাতাসে ফলের ঘ্রাণ

চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস। এখন হবিগঞ্জে পাহাড়ের কেমিক্যালমুক্ত ফলের ঘ্রাণে স্থানীয়দের মন মাতোয়ারা। দোকানিরা পাহাড়ের হরেক রকমের ফল পাইকারিভাবে কিনে এনে রাস্তার পাশে বসে বিক্রি করছেন। ক্রেতারাও ফল কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। মনে হবে, এখন পাহাড়ে যেন ফলের মেলা। বিশেষ করে হবিগঞ্জ জেলার বিশাল অংশজুড়ে থাকা পাহাড়ি এলাকায় এসব কেমিক্যালমুক্ত ফল চাষ হচ্ছে। তাই এসব ফল কিনতে ক্রেতারা এখন পাহাড়মুখী। স্থানীয় হাট-বাজারে ফলের রাজা কাঁঠাল, লিচু, আনারস ও আম উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যাচ্ছে।

কথা হয়েছে জেলার বাহুবল উপজেলার মুছাই বাজারে লিচু কিনতে আসা হবিগঞ্জ শহরের বাসিন্দা কাজল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কেমিক্যালমুক্ত ফল কিনছি। বাচ্চারা লিচু ফলটি খেয়ে খুব স্বাদ পায়। আমরা অনেক খেয়েছি। এখন বাচ্চাদের সময়। আমাদের পাহাড়ে কেমিক্যালমুক্ত ফল চাষ হচ্ছে। কারণ, পাহাড়ের আবহাওয়া ভালো। তাই ফল চাষে কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেলার পাহাড়জুড়ে বারোমাসি ফল চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম কাঁঠাল, লিচু, আনারস, লেবু, পেঁপে, আম, জাম্বুরা, কমলা, মাল্টা। পাহাড়ি ফলে কেমিক্যাল দেওয়া হয় না, বিধায় এসব খেয়ে তৃপ্তি পাওয়া যাচ্ছে। আর স্বাস্থ্যের জন্যও উপকার। তারমধ্যেও একশ্রেণির অসাধু বিক্রেতা বেশি মূল্যে বিক্রি করতে ফলে কেমিক্যাল প্রয়োগ করছেন। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাকে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাহলে আর কেমিক্যালমুক্ত ফল নিয়ে কাউকে ভাবতে হবে না। হবিগঞ্জ শহরে রাস্তার পাশে বসা লিচু বিক্রেতা ফজল মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ে গাছ কিনেছি। সেখান থেকে লিচুগুলো বিক্রির জন্য এখানে নিয়ে এসেছি। একশ লিচু ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাহাড়ি ফলের কথা জানতে পেরে ক্রেতারাও কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।’

শায়েস্তাগঞ্জ দাউদনগর বাজার এলাকার লিচু বিক্রেতা ইদ্রিছ আলী বলেন, ‘মিরপুর ও মুছাই বাজারের আড়ৎ থেকে পাইকারিভাবে লিচু কিনে এনেছি। কেমিক্যালমুক্ত লিচু বলে সবাই কিনছেন। এখানকার লিচু ছাড়াও মুকন্দপুর এলাকা থেকেও ক্রয় করা হয়। তবে হবিগঞ্জের পাহাড় ও সমতল এলাকার লিচু ক্রেতাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়।’

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, মাধবপুর, চুনারুঘাট উপজেলায় রয়েছে পাহাড়। এ পাহাড়ে বারোমাসি কেমিক্যালমুক্ত ফল চাষ হচ্ছে। তাই ক্রেতারা পাহাড়ি ফল ক্রয়ে আগ্রহ বেশি। পাহাড়ের ন্যায় জেলার সমতল এলাকায়ও কেমিক্যালমুক্ত হরেক রকমের ফল চাষে সফলতা আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেমিক্যালমুক্ত ফল চাষে আমরা কৃষকদের নানাভাবে উৎসাহ দিচ্ছি। তাতে কাজ হচ্ছে। আগের মতো বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বেশি পরিমাণে ফল চাষ হচ্ছে। হবিগঞ্জের ফল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানাস্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এখন চারদিকে পাহাড়ি ফলের ঘ্রাণ।’

About admin

Check Also

ভালো দাম পাওয়ায় বাড়ছে কলা চাষ

অল্প খরচে ভালো ফলন আবার দামও বেশি, তাই কলা চাষে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন দিনাজপুরের বিরামপুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *